দীণার ওপর বলাৎকার
১. দীণা ছিল যাকোব এবং লেয়ার কন্যা। একদিন দীণা সেই জায়গার মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে গেল।
২. হমোর ছিলেন সেই দেশের রাজা, তাঁর পুত্র শিখিম দীণাকে দেখতে পেলেন। শিখিম দীণাকে ধরে নিয়ে গিয়ে বলাৎকার করলেন।
৩. শিখিম দীণার প্রেমে পড়ে তাকে বিয়ে করার জন্য অনুণয় করতে লাগলেন।
৪. শিখিম তাঁর পিতাকে বললেন, “দয়া করে ওকে আমার জন্যে এনে দাও যেন আমি বিয়ে করতে পারি।”
৫. যাকোব জানতে পারল যে ছেলেটি তার কন্যার সাথে ঐ মারাত্মক খারাপ কাজটি করেছে। কিন্তু যেহেতু তার সব কটি পুত্রই মাঠে পশু চরাতে গিয়েছিল, সেই জন্য তারা ঘরে ফিরে না আসা পর্যন্ত তিনি কিছুই করলেন না।
৬. সেই সময় শিখিমের পিতা হমোর যাকোবের সঙ্গে কথা বলতে এলেন।
৭. যাকোবের পুত্রেরা মাঠেই জানতে পারল কি ঘটেছে। ঘটনা শুনে তারা খুবই রেগে গেল কারণ শিখিম যাকোবের কন্যাকে বলাৎকার করে ইস্রায়েলকে লজ্জায় ফেলেছিলেন। শিখিমের করা এই ভয়ঙ্কর ঘটনা শুনতে পেয়েই ভাইয়েরা ক্ষেত থেকে ফিরে এল।
৮. কিন্তু হমোর ভাইদের বললেন, “আমার পুত্র শিখিম দীণাকে খুবই চায়। অনুগ্রহ করে ওকে বিয়ে করতে দাও।
৯. এই বিবাহ বোঝাবে যে তোমাদের সঙ্গে আমাদের এক বিশেষ চুক্তি হয়েছে। তখন আমাদের পুত্ররা তোমাদের কন্যাদের এবং তোমাদের পুত্ররা আমাদের কন্যাদের বিয়ে করতে পারবে।
১০. তোমরা আমাদের সঙ্গে এই একই দেশে থাকতে পারবে। তোমরা এখানকার জমির মালিক হবে ও ব্যবসা করতে পারবে।”
১১. শিখিম নিজেও যাকোব ও ভাইয়েদের সঙ্গে কথা বললেন। শিখিম বললেন, “দয়া করে আমায় গ্রহণ কর। তোমরা আমাকে যা করতে বলবে তাই-ই করব।
১২. যদি তোমরা আমায় কেবল দীণাকে বিয়ে করতে দাও, তবে তোমাদের চাওযা যে কোন উপহার আমি তোমাদের দেব। তোমরা যা চাইবে তাই-ই দেব, কেবল দীণাকে বিয়ে করতে দাও।”
১৩. যাকোবের পুত্ররা শিখিম ও তার পিতাকে মিথ্যা বলব বলে ঠিক করল। ভাইয়েরা তাদের রাগ সামলাতে পারছিল না কারণ শিখিম তাদের বোন দীণার প্রতি এই জঘন্য কাজ করেছিলেন।
১৪. তাই ভাইয়েরা তাঁকে বলল, “আপনি সুন্নত নন বলে আপনার সঙ্গে আমাদের বোনের বিয়ে দিতে পারি না। যদি আমরা আমাদের বোনকে আপনাকে বিয়ে করতে দিই তা হবে আমাদের পক্ষে এক অপমান।
১৫. কিন্তু আপনি এই একটি কাজ করলে আমরা তার সঙ্গে আপনার বিয়ে দিতে পারি। আপনার শহরের প্রত্যেকটি পুরুষকে আমাদের মত সুন্নত হতে হবে।
১৬. তাহলে আপনাদের পুত্ররা আমাদের কন্যাদের এবং আমাদের কন্যারা আপনাদের পুত্রদের বিয়ে করতে পারবে। তাহলে আমরা এক জাতি হব।
১৭. যদি আপনি সুন্নত হতে অস্বীকার করেন তবে আমরা দীণাকে নিয়ে যাব।”
১৮. এই চুক্তি হমোর এবং শিখিমকে খুব আনন্দিত করল।
১৯. দীণার ভাইয়েরা যা করতে বলল তাতে শিখিম খুশী হয়ে রাজী হলেন। শিখিম ছিলেন তাঁর পরিবারে সবচেয়ে সম্মানীয় ব্যক্তি।
প্রতিশোধ
২০. হমোর ও শিখিম তাঁদের শহরের সমাগম স্থানে গেলেন। তাঁরা শহরের পুরুষদের সঙ্গে কথা বললেন।
২১. তাঁরা বললেন, “ইস্রায়েলের এই লোকরা আমাদের বন্ধু হতে চায়। তারা আমাদের দেশে বাস করুক ও আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করুক। আমাদের সকলের জন্য য়থেষ্ট জায়গা আমাদের রয়েছে। তাদের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক বিবাহও হতে পারে। আমাদের ছেলেরা তাদের মেয়েদের বিয়ে করতে পারে এবং তাদের মেয়েরা আমাদের ছেলেদের বিয়ে করতে পারে।
২২. কিন্তু একটি বিষয আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হবে। আমাদের সব পুরুষকে সুন্নত হতে হবে, যেমনটি ইস্রায়েলের লোকরা হয়ে রয়েছে।
২৩. একাজ করলে আমরা তাদের গো-মেষাদির পাল ও পশুর দ্বারা এবং সম্পত্তির দ্বারা ধনী হব। সুতরাং তাদের সঙ্গে আমাদের এই চুক্তি করা উচিৎ, তাহলে তারা এখানে আমাদের সঙ্গে থাকবে।”
২৪. সমবেত সমস্ত লোক হমোর ও শিখিমের কথা শুনে সম্মতি জানাল। আর সব পুরুষরা সেই সময় সুন্নত হল।
২৫. তিন দিন পরেও সুন্নত হওয়া লোকরা তখনও পীড়িত ছিল। যাকোবের দুই পুত্র শিমিয়োন ও লেবি জানত যে ঐ লোকরা এই সময়ে দুর্বল থাকবে। তাই তারা শহরে ঢুকে সেখানকার সমস্ত লোককে হত্যা করল।
২৬. দীণার ভাই শিমিয়োন ও লেবি এই দুজনে মিলে হমোর ও তার পুত্র শিখিমকে হত্যা করল। তারা শিখিমের বাড়ী থেকে দীণাকে বের করে নিয়ে এল।
২৭. যাকোবের পুত্ররা শহরের সব কিছু লুঠ করল। শিখিম তাদের বোনের সঙ্গে ভ্রষ্টাচার করার জন্য তারা তখনও রেগে ছিল।
২৮. তাই ভাইয়েরা সমস্ত পশু, গাধা এবং শহরে ও ক্ষেতে যা কিছু ছিল তার সবই নিয়ে নিল।
২৯. সেই লোকেদের সর্বস্ব এমনকি তাদের স্ত্রী ও শিশুদের অধিকার করল।
৩০. কিন্তু যাকোব শিমিয়োন ও লেবিকে বলল, “তোমরা আমায় অনেক বিপদে ফেলেছ। এই অঞ্চলের সমস্ত লোক এখন আমায় ঘৃণা করবে। কনানীয় ও পরিষীয় সমস্ত লোকরা আমার বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে। আমরা এখানে অল্প কয়েকজন রয়েছি। যদি এই জায়গার লোকরা একত্রে আমাদের সঙ্গে য়ুদ্ধ করতে আসে, তবে আমি তো ধ্বংস হবোই এমনকি আমার সমস্ত লোকও আমার সঙ্গে ধ্বংস হবে।”
৩১. কিন্তু ভাইয়েরা বলল, “ঐ লোকরা আমাদের বোনের সঙ্গে বেশ্যার মত যে ব্যবহার করেছে সেটাও কি উচিৎ ছিল? না, ঐ লোকেরা আমাদের বোনের প্রতি অন্যায় করেছে।”