যাকোবের পত্নী সন্ধান

১. ইসহাক যাকোবকে ডেকে পাঠালেন এবং তাকে আশীর্বাদ করলেন। তারপর ইসহাক যাকোবকে একটি আজ্ঞা করলেন। তিনি বললেন, “তুমি কখনও কনানের মেয়ে বিয়ে করবে না।

২. তাই এই জায়গা ছেড়ে পদ্দন্-অরামে চলে যাও। তোমার দাদামশায় বথূয়েলের কাছে যাও। তোমার মামা লাবনের কন্যাদের কোন একজনকে বিয়ে করো।

৩. প্রার্থনা করি যে সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমায় আশীর্বাদ করবেন এবং তোমায় বহু সন্তানসন্ততি দেবেন। তুমি যাতে এক মহান জাতির জনক হও তার জন্যে আমি প্রার্থনা করি।

৪. যেভাবে ঈশ্বর অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন সেভাবে তিনি যেন তোমায় ও তোমার সন্তান-সন্ততিকে আশীর্বাদ করেন-এই প্রার্থনা করি এবং আমি প্রার্থনা করি যে, যে দেশে তুমি বাস করবে সেই দেশ তোমার হবে। ঈশ্বর এই দেশ অব্রাহামকে দিয়েছিলেন।”

৫. তখন ইসহাক যাকোবকে পদ্দন্-অরাম নামক স্থানে পাঠালেন। যাকোব গেলেন রিবিকার ভাই লাবনের কাছে। বথুয়েল লাবন ও রিবিকার জনক এবং যাকোব ও এষৌর মা হলেন রিবিকা।

৬. এষৌ জানতে পারল যে তার পিতা ইসহাক যাকোবকে আশীর্বাদ করেছেন। এষৌ জানল যে ইসহাক যাকোবকে পদ্দন-অরামে পাঠিয়েছেন সেখানে বিয়ে করার জন্যে। ইসহাক যে যাকোবকে কনানের মেয়ে বিয়ে না করার আদেশ দিয়েছেন সে কথাও এষৌ জানল।

৭. এষৌ জানল যেঁ যাকোব পিতামাতাকে মেনে চলেছে এবং পদ্দন্-অরামে গেছে।

৮. এসবের থেকে এষৌ বুঝল যে তাদের পিতা ইসহাক চাইতেন না যেঁ পুত্ররা কেউ কনানের মেয়েদের বিয়ে করে।

৯. এষৌর তখনই দুজন স্ত্রী ছিল। কিন্তু সে ইশ্মায়েলের কাছে গিয়ে আরও একটি বিয়ে করল। এবার সে ইশ্মায়েলের কন্যা মহলৎকে বিয়ে করল। অব্রাহামের আর এক পুত্র ইশ্মায়েল। মহলৎ নবায়োতের বোন।

 

ঈশ্বরের গৃহ বৈথেল

১০. যাকোব বের্-শেবা ছেড়ে হারণে গেল।

১১. হারণে যাওয়ার পথে সূর্যাস্ত হল। তখন যাকোব রাত কাটাবার জন্যে একটা জায়গায় গেল। সেখানে একটা পাথর দেখতে পেয়ে সে তার ওপরে মাথা রেখে ঘুমিযে পড়ল।

১২. ঘুমের মধ্যে যাকোব একটা স্বপ্ন দেখল। সে দেখল, মাটি থেকে একটা সিঁড়ি গেছে স্বর্গে। যাকোব দেখল যেঁ ঈশ্বরের দূতরা ঐ সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করছে। আর যাকোব দেখল যে প্রভু সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন।

১৩. প্রভু বললেন, “আমিই প্রভু, তোমার পিতামহ অব্রাহামের ঈশ্বর। আমি ইসহাকের ঈশ্বর। যে জমিতে তুমি এখন শুয়ে আছ তা আমি তোমাকে দেব। এই জমি আমি তোমাকে এবং তোমার বংশকে দেব।

১৪. তোমার বহু সংখ্যক উত্তরপুরুষ হবে। তারা পৃথিবীর ধূলোর মতো অসংখ্য হবে। তারা পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়বে। পৃথিবীর সব জাতিরা তোমার এবং তোমার উত্তরপুরুষদের মাধ্যমে আশীর্বাদ পাবে।

১৫. “আমি তোমার সঙ্গে আছি। তুমি যে কোন জায়গায় যাও না কেন আমি তোমাকে রক্ষা করব এবং এই দেশে আবার ফিরিয়ে আনব। আমি তোমার কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছি তা পূর্ণ না করা পর্যন্ত আমি তোমায় ত্যাগ করব না।”

১৬. যাকোব ঘুম থেকে উঠে বলল, “আমি জানি প্রভু এই জায়গায় রয়েছেন। কিন্তু আমি না ঘুমানো পর্যন্ত জানতাম না যে তিনি এখানে রয়েছেন।”

১৭. যাকোব ভয় পেল। সে বলল, “এ এক মহান জায়গা। এই হল ঈশ্বরের গৃহ। এই হল স্বর্গের দ্বার।”

১৮. যাকোব খুব ভোরে উঠে পড়ল। যে পাথরে মাথা রেখে শুয়েছিল তা দাঁড় করিয়ে স্থাপন করল। তারপর সে সেই পাথরের উপর তেল ঢালল। এইভাবে সে সেই পাথরকে ঈশ্বরের স্মরনার্থে স্মৃতি চিহ্নস্বরূপ করল।

১৯. সেই জায়গার নাম ছিল লুস কিন্তু যাকোব তার নাম বৈথেল রাখল।

২০. এরপর যাকোব এক প্রতিজ্ঞা করে বলল, “যদি ঈশ্বর আমার সহায় থাকেন, যদি তিনি আমাকে এ যাত্রায় রক্ষা করেন, যদি তিনি আমার খাদ্য ও পরণের কাপড় যোগান,

২১. আর যদি আমি শান্তিতে আমার পিতার গৃহে ফিরতে পারি, যদি ঈশ্বর এই সমস্ত কিছুই সাধন করেন তাহলে প্রভুই আমার ঈশ্বর হবেন।

২২. এই পাথর আমি স্মৃতিস্তম্ভ রূপে স্থাপন করছি। এটা প্রমাণ করবে যে এ জায়গা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে এবং পবিত্র জায়গা। এবং ঈশ্বর আমাকে যা কিছু দেবেন তার দশ ভাগের এক ভাগ অংশ আমি ঈশ্বরকে দেব।”

error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x