পৃথিবীর বিভাজন
১. প্লাবনের পরে সমস্ত পৃথিবী এক ভাষাতে কথা বলত। সমস্ত মানুষ একই শব্দগুলি ব্যবহার করত।
২. সেই লোকেরা পূর্ব দিক থেকে ঘুরতে ঘুরতে শিনিয়র দেশে এসে সমতল ভূমি পেল। তারা সেখানে বসবাস শুরু করল।
৩. তারা বলল, “আমরা মাটি দিয়ে ইঁট তৈরী করব, তারপর আরও শক্ত করার জন্যে ইঁটগুলো পোড়াব।” তখন মানুষ পাথরের বদলে ইঁট দিয়ে বাড়ি তৈরী করল। আর গাঁথনি শক্ত করার জন্যে সিমেন্টের বদলে আলকাতরা ব্যবহার করল।
৪. তারা বলল, “এস আমরা আমাদের জন্যে এক বড় শহর বানাই। আর এমন একটি উঁচু স্তম্ভ বানাই যা আকাশ স্পর্শ করবে। তাহলে আমরা বিখ্যাত হব এবং এটা আমাদের এক সঙ্গে ধরে রাখবে। সারা পৃথিবীতে আমরা ছড়িয়ে থাকব না।”
৫. সেই শহর আর সেই আকাশস্পর্শী স্তম্ভ দেখতে প্রভু পৃথিবীতে নেমে এলেন। মানুষ কি কি তৈরী করেছে সেসব প্রভু দেখলেন।
৬. প্রভু বললেন, “সব মানুষ একই ভাষাতে কথা বলছে। আর দেখতে পাচ্ছি যে এসব কাজ করার জন্যে তারা ঐক্যবদ্ধ। তারা কি করতে পারে এ তো সবে তার শুরু। শীঘ্রই তারা যা চায় তাই করতে পারবে।
৭. তাহলে এস আমরা নীচে গিয়ে ওদের এক ভাষাকে নানারকম ভাষা করে দিই। তাহলে তারা পরস্পরকে বুঝতে পারবে না।”
৮. সুতরাং প্রভু সমস্ত লোকেদের সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিলেন। ফলে মানুষ আর সেই শহর তৈরির কাজ শেষ করতে পারল না।
৯. এই সেই স্থান যেখানে প্রভু সমস্ত পৃথিবীর এক ভাষাকে অনেক ভাষাতে বিভ্রান্ত করলেন। তাই এই স্থানটির নাম হলো বাবিল। এইভাবে প্রভু তাঁদের সেই স্থান থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিলেন।
শেমের পরিবারের কাহিনী
১০. এটা হল শেমের পরিবারের কাহিনী। প্লাবনের দু বছর পরে, যখন শেমের বয়স ১০০বছর তখন তার অর্ফক্ষদ নামে পুত্রটির জন্ম হয়।
১১. তারপরে শেম ৫০০ বছর বেঁচেছিলেন। তাঁর আরও পুত্রকন্যা ছিল।
১২. অর্ফক্ষদের ৩৫ বছর বয়সে তাঁর পুত্র শেলহের জন্ম হয়।
১৩. শেলহের জন্মের পরে অর্ফক্ষদ ৪০০ বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়।
১৪. যখন শেলহের বয়স ৩০ বছর তখন এবর নামে তাঁর এক পুত্র হয়।
১৫. এবরের জন্মের পরে শেলহ ৪০০ বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়।
১৬. এবরের যখন ৩৪ বছর বয়স তখ পেলগ নামে তাঁর এক পুত্র হয়।
১৭. পেলগের জন্মের পর এবর ৪৩০ বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়।
১৮. পেলগের যখন ৩০ বছর বয়স তখন রিযু নামে তাঁর এক পুত্র হয়।
১৯. রিযুর জন্মের পরে পেলগ আরও ২০০ বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়েছিল।
২০. রিযুর যখন ৩২ বছর বয়স তখন সরূগ নামে তাঁর এক পুত্র হয়।
২১. সরূগের জন্মের পরে রিযু ২০৭ বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়েছিল।
২২. সরূগের যখন ৩০ বছর বয়স তখন নাহোর নামে তাঁর এক পুত্র হয়।
২৩. নাহোরের জন্মের পরে সরূগ ২০০ বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়েছিল।
২৪. নাহোরের যখন ২৯ বছর বয়স তখন তেরহ নামে তাঁর এক পুত্র হয়।
২৫. তেরহের জন্মের পরে নাহোর আরও ১১৯ বছর বেঁচেছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর আরও পুত্রকন্যা হয়েছিল।
২৬. তেরহ ৭০ বছর বয়সে যথাক্রমে অব্রাম, নাহোর ও হারণ নামে পুত্রদের জন্ম দিলেন।
তেরহের পরিবারের কাহিনী
২৭. এটা হল তেরহের পরিবারের কাহিনী। তেরহ হল অব্রাম, নাহোর ও হারণের জনক। হারণ ছিল লোটের জনক।
২৮. কিন্তু তেরহের জীবদ্দশাতেই আপন জন্মস্থান কলদীয় দেশের উরে হারণের মৃত্যু হয়।
২৯. অব্রাম ও নাহোর দুজনেই বিবাহ করেন। অব্রামের স্ত্রীর নাম সারী আর নাহোরের স্ত্রীর নাম মিল্কা। মিল্কা ছিল হারণের কন্যা। হারণ ছিলেন মিল্কা ও যিষ্কার পিতা।
৩০. সারী বন্ধ্যা ছিল তাই তাঁর কোনও সন্তান হয় নি।
৩১. তেরহ তাঁর পরিবার নিয়ে কলদীয় দেশের উর পরিত্যাগ করলেন। তাঁদের পরিকল্পনা ছিল কনান দেশে যাওয়ার। তেরহ তাঁর পুত্র অব্রাম, তাঁর পৌত্র লোট এবং পুত্রবধূ সারীকে সঙ্গে নিলেন। তাঁরা হারণ নামে একটা শহরে পৌঁছে সেখানেই বাস করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
৩২. তেরহ ২০৫ বছর বেঁচেছিলেন এবং হারণেই তাঁর মৃত্যু হয়।