৩৬. সূরাঃ ইয়াসীন

আয়াতঅবতীর্ণঃ মক্কা
আয়াত সংখ্যাঃ ৮৩
রুকূঃ ৫
৫১وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَىٰ رَبِّهِمْ يَنسِلُونَ
যখন শিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে তখনই তারা কবর হতে ছুটে আসবে তাদের প্রতিপালকের দিকে।
৫২قَالُوا يَا وَيْلَنَا مَن بَعَثَنَا مِن مَّرْقَدِنَا ۜ ۗ هَـٰذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَـٰنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ
তারা বলবেঃ হায়! দুর্ভোগ আমাদের! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল হতে উঠালো? দয়াময় আল্লাহ তো এরই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং রাসূলগণ সত্যই বলেছিলেন।
৫৩إِن كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيعٌ لَّدَيْنَا مُحْضَرُونَ
এটা হবে শুধুমাত্র এক বিকট আওয়াজ; তখনই তাদের সকলকে উপস্থিত করা হবে আমার সামনে।
৫৪فَالْيَوْمَ لَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
আজ কারো প্রতি কোন যুলুম করা হবে না এবং তোমরা যা করতে শুধু তারই প্রতিফল দেয়া হবে।
৫৫إِنَّ أَصْحَابَ الْجَنَّةِ الْيَوْمَ فِي شُغُلٍ فَاكِهُونَ
এই দিন জান্নাতবাসীরা আনন্দে মগ্ন থাকবে।
৫৬هُمْ وَأَزْوَاجُهُمْ فِي ظِلَالٍ عَلَى الْأَرَائِكِ مُتَّكِئُونَ
তারা এবং তাদের স্ত্রীগণ (সুশীতল) ছায়ায় সুসজ্জিত আসনে হেলান দিয়ে বসবে।
৫৭لَهُمْ فِيهَا فَاكِهَةٌ وَلَهُم مَّا يَدَّعُونَ
সেথায় থাকবে তাদের জন্যে ফলমূল এবং তাদের জন্যে থাকবে যা তারা চাইবে।
৫৮سَلَامٌ قَوْلًا مِّن رَّبٍّ رَّحِيمٍ
পরম দয়ালু প্রতিপালকের পক্ষ হতে তাদেরকে বলা হবে ‘সালাম’।
৫৯وَامْتَازُوا الْيَوْمَ أَيُّهَا الْمُجْرِمُونَ
আর হে অপরাধীগণ! তোমরা আজ পৃথক হয়ে যাও।
৬০أَلَمْ أَعْهَدْ إِلَيْكُمْ يَا بَنِي آدَمَ أَن لَّا تَعْبُدُوا الشَّيْطَانَ ۖ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِينٌ
হে বানী আদম! আমি কি তোমাদেরকে নির্দেশ দিইনি যে, তোমরা শয়তানের ইবাদত করো না, কারণ সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
৬১وَأَنِ اعْبُدُونِي ۚ هَـٰذَا صِرَاطٌ مُّسْتَقِيمٌ
আর আমারই ইবাদত কর, এটাই সরল পথ।
৬২وَلَقَدْ أَضَلَّ مِنكُمْ جِبِلًّا كَثِيرًا ۖ أَفَلَمْ تَكُونُوا تَعْقِلُونَ
শয়তান তো তোমাদের বহু দলকে বিভ্রান্ত করেছিল, তবুও কি তোমরা বুঝনি?
৬৩هَـٰذِهِ جَهَنَّمُ الَّتِي كُنتُمْ تُوعَدُونَ
এটা সেই জাহান্নাম যার প্রতিশ্রুতি তোমাদেরকে দেয়া হয়েছিল।
৬৪اصْلَوْهَا الْيَوْمَ بِمَا كُنتُمْ تَكْفُرُونَ
আজ তোমরা এতে প্রবেশ কর; কারণ তোমরা একে অবিশ্বাস করেছিলে।
৬৫الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَىٰ أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُم بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ
আজ আমি এদের মুখে মোহর লাগিয়ে দিবো, এদের হাত কথা বলবে আমার সাথে এবং এদের পা সাক্ষ্য দিবে এদের কৃতকর্মের।
৬৬وَلَوْ نَشَاءُ لَطَمَسْنَا عَلَىٰ أَعْيُنِهِمْ فَاسْتَبَقُوا الصِّرَاطَ فَأَنَّىٰ يُبْصِرُونَ
আমি ইচ্ছা করলে এদের চক্ষুগুলোকে বিলীন করে দিতে পারতাম, তখন এরা পথ চলতে চাইলে কি করে দেখতে পেতো?
৬৭وَلَوْ نَشَاءُ لَمَسَخْنَاهُمْ عَلَىٰ مَكَانَتِهِمْ فَمَا اسْتَطَاعُوا مُضِيًّا وَلَا يَرْجِعُونَ
এবং আমি ইচ্ছা করলে এদেরকে স্ব-স্ব স্থানে (আকৃতি) বিকৃত করে দিতে পারতাম, ফলে এরা চলতে পারতো না এবং ফিরেও আসতে পারতো না।
৬৮وَمَن نُّعَمِّرْهُ نُنَكِّسْهُ فِي الْخَلْقِ ۖ أَفَلَا يَعْقِلُونَ
আমি যাকে দীর্ঘ জীবন দান করি তার স্বাভাবিক সৃষ্টি হতে আমি তাকে উল্টিয়ে দেই। তবুও কি তারা বুঝে না?
৬৯وَمَا عَلَّمْنَاهُ الشِّعْرَ وَمَا يَنبَغِي لَهُ ۚ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ وَقُرْآنٌ مُّبِينٌ
আমি তাকে (রাসূলকে সঃ) কবিতা রচনা করতে শিখাইনি এবং এটা তার পক্ষে উচিতও নয়। এটাতো শুধু উপদেশ এবং সুস্পষ্ট কুরআন।
৭০لِّيُنذِرَ مَن كَانَ حَيًّا وَيَحِقَّ الْقَوْلُ عَلَى الْكَافِرِينَ
যাতে সে সতর্ক করতে পারে যারা জীবিত তাদেরকে এবং যাতে কাফিরদের বিরুদ্ধে শাস্তির কথা সত্য হতে পারে।
৭১أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُم مِّمَّا عَمِلَتْ أَيْدِينَا أَنْعَامًا فَهُمْ لَهَا مَالِكُونَ
তারা কি লক্ষ্য করে না যে, নিজ হাতে সৃষ্ট বস্তুদের মধ্যে তাদের জন্যে আমি সৃষ্টি করেছি গৃহপালিত জন্তু এবং তারাই এগুলোর অধিকারী।
৭২وَذَلَّلْنَاهَا لَهُمْ فَمِنْهَا رَكُوبُهُمْ وَمِنْهَا يَأْكُلُونَ
এবং আমি এগুলোকে তাদের বশীভূত করে দিয়েছি। এগুলোর কতক তাদের বাহন এবং এগুলোর কতক তাদের বাহন এবং এগুলোর কতক তারা আহার করে।
৭৩وَلَهُمْ فِيهَا مَنَافِعُ وَمَشَارِبُ ۖ أَفَلَا يَشْكُرُونَ
তাদের জন্য এগুলোতে আছে বহু উপকারিতা আর আছে পানীয় বস্তু। তবুও কি তারা কৃতজ্ঞ হবে না?
৭৪وَاتَّخَذُوا مِن دُونِ اللَّهِ آلِهَةً لَّعَلَّهُمْ يُنصَرُونَ
তারা তো আল্লাহর পরিবর্তে অন্য মা’বূদ গ্রহণ করেছে এই আশায় যে, তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে।
৭৫لَا يَسْتَطِيعُونَ نَصْرَهُمْ وَهُمْ لَهُمْ جُندٌ مُّحْضَرُونَ
(অথচ) এসব মা’বূদ তাদের সাহায্য করতে সক্ষম নয়; বরং তাদেরকে তাদের বাহিনীরূপে (সাহায্যকারী রূপে) উপস্থিত করা হবে।
৭৬فَلَا يَحْزُنكَ قَوْلُهُمْ ۘ إِنَّا نَعْلَمُ مَا يُسِرُّونَ وَمَا يُعْلِنُونَ
অতএব তাদের কথা তোমাকে যেন দুঃখ না দেয়। আমি তো জানি যা তারা গোপন করে এবং যা তারা ব্যক্ত করে।
৭৭أَوَلَمْ يَرَ الْإِنسَانُ أَنَّا خَلَقْنَاهُ مِن نُّطْفَةٍ فَإِذَا هُوَ خَصِيمٌ مُّبِينٌ
মানুষ কি দেখে না যে, আমি তাকে সৃষ্টি করেছি শুক্রবিন্দু হতে? অথচ হঠাৎ করেই সে হয়ে পড়ে প্রকাশ্য বিতণ্ডাকারী।
৭৮وَضَرَبَ لَنَا مَثَلًا وَنَسِيَ خَلْقَهُ ۖ قَالَ مَن يُحْيِي الْعِظَامَ وَهِيَ رَمِيمٌ
আর সে আমার সম্বন্ধে উপমা রচনা করে অথচ সে নিজের সৃষ্টির কথা ভুলে যায়; বলেঃ হাড্ডিতে প্রাণ সঞ্চার করবে কে, যখন ওটা পচে গলে যাবে?
৭৯قُلْ يُحْيِيهَا الَّذِي أَنشَأَهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ خَلْقٍ عَلِيمٌ
বলঃ ওর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করবেন তিনিই এটা প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি প্রত্যেকটি সৃষ্টি সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত।
৮০الَّذِي جَعَلَ لَكُم مِّنَ الشَّجَرِ الْأَخْضَرِ نَارًا فَإِذَا أَنتُم مِّنْهُ تُوقِدُونَ
তিনি তোমাদের জন্যে সবুজ বৃক্ষ হতে অগ্নি উৎপাদন করেন এবং তোমরা ওটা দ্বারা প্রজ্বলিত কর।
৮১أَوَلَيْسَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بِقَادِرٍ عَلَىٰ أَن يَخْلُقَ مِثْلَهُم ۚ بَلَىٰ وَهُوَ الْخَلَّاقُ الْعَلِيمُ
যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তিনি কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সমর্থ নন? হ্যাঁ, নিশ্চয়ই তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।
৮২إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَن يَقُولَ لَهُ كُن فَيَكُونُ
তাঁর ব্যাপার শুধু এই যে, যখন তিনি কোন কিছুর ইচ্ছা করেন তখন ওকে বলেনঃ হও, ফলে তা হয়ে যায়।
৮৩فَسُبْحَانَ الَّذِي بِيَدِهِ مَلَكُوتُ كُلِّ شَيْءٍ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
অতএব, পবিত্র ও মহান তিনি যার হাতে প্রত্যেক বিষয়ের সার্বভৌম ক্ষমতা এবং তাঁরই নিকট তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তিত করা হবে।
error: Content is protected !!
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x