মোশি পবিত্র তাঁবু স্থাপন করল
১. তখন প্রভু মোশিকে বললেন,
২. “প্রথম মাসের প্রথম দিনে তোমরা পবিত্র তাঁবু অর্থাৎ সমাগম তাঁবু স্থাপন করবে।
৩. সাক্ষ্য সিন্দুকটি পবিত্র তাঁবুতে রাখো এবং আবরণ দিয়ে ঢেকে দাও।
৪. টেবিলটি নিয়ে এসো এবং ওপরে যে সব জিনিস থাকার কথা সেগুলি রাখো। তারপর দীপদানটি তাঁবুতে নিয়ে এসে দীপগুলি ঠিক জায়গা মতো রাখো।
৫. এরপর তাঁবুতে নৈবেদ্য দেওয়ার জন্য সোনার বেদীটি নিয়ে এসো। সাক্ষ্য সিন্দুকটির সামনে বেদীটি রাখো। পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজায় পর্দা টাঙিয়ে দাও।
৬. “হোমবলি দেওয়ার জন্য বেদীটি পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজার সামনে রাখো।
৭. হাতমুখ ধোওয়ার জন্য পাত্রটিতে জল রেখে সেটি সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে রাখো।
৮. প্রাঙ্গণের চারিদিকে পর্দার দেওয়াল টাঙিয়ে দাও। তারপর প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজায় পর্দা লাগিয়ে দাও।
৯. “অভিষেক তেল ব্যবহার করে পবিত্র তাঁবু ও তার ভেতরের সবকিছুর অভিষেক করো। তুমি যখন ঐসব জিনিসের ওপর তেল ছেটাবে তখন সবকিছু পবিত্র হয়ে যাবে।
১০. হোমবলির জন্য বেদীটি অভিষেক করো এবং অভিষেকের তেল দিয়ে বেদীর সমস্ত জিনিস অভিষিক্ত করো। এতে বেদীটি খুব পবিত্র হয়ে উঠবে।
১১. পাত্র ও পাত্র দানকে পবিত্র করবার জন্য তাদের অভিষেক করো।
১২. “হারোণ ও তার পুত্রদের সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজায় নিয়ে এসো। তাদের জল দিয়ে স্নান করাও।
১৩. তারপর হারোণকে বিশেষ পোশাক পরাও। তাকে তেল দিয়ে অভিষেক করে পবিত্র করো। তাহলে সে যাজকরূপে আমার সেবা করতে পারবে।
১৪. তার পুত্রদের পোশাক পরাও।
১৫. তার পুত্রদের ঠিক সেভাবে অভিষেক করাও যেভাবে তাদের পিতাকে করেছ। তাহলে তারাও যাজক হিসেবে আমার সেবা করতে পারবে। যখন তুমি তাদের অভিষেক করবে তখন তারা যাজক হয়ে যাবে। এবং এই পরিবার আগামী দিনেও চিরকালের মত যাজকের কাজ করবে।”
১৬. মোশি প্রভুর আদেশ মেনে তাঁর নির্দেশ মতো সবকিছু করল।
১৭. তাই ঠিক সমযে পবিত্র তাঁবু স্থাপন করা হল। তারা মিশর ছেড়ে যাবার দ্বিতীয় বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিন তাঁবু স্থাপন করা হয়েছিল।
১৮. মোশি তাঁবুর ভিত্তিগুলো জায়গামত স্থাপন করল। তারপর সে ভিত্তিগুলোর ওপর কাঠামোটি বসাল এবং আগল দিয়ে খুঁটিগুলো বসাল।
১৯. তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর ওপর বাইরের তাঁবু বসাল। এবং তার ওপর আচ্ছাদন দিল। সে সব কিছুই প্রভুর আদেশ মতো করল।
২০. মোশি চুক্তিপত্র নিয়ে পবিত্র সিন্দুকে রাখল। খুঁটিগুলো সিন্দুকের ওপর রেখে সেটিকে আবরণ দিয়ে ঢেকে দিল।
২১. তারপর মোশি পবিত্র সিন্দুকটি পবিত্র তাঁবুতে রাখল। সিন্দুকটির সুরক্ষার জন্য সে ঠিক জায়গায় পর্দা টাঙ্গালো এবং এভাবেই সে প্রভুর আদেশ মতো সাক্ষ্য সিন্দুকটির সুরক্ষার ব্যবস্থা করল।
২২. তারপর সে পবিত্র তাঁবুর উত্তরদিকে পবিত্র স্থানের পর্দার সামনে টেবিলটি রাখলো।
২৩. প্রভুর আদেশ অনুসারে মোশি প্রভুর সামনে টেবিলের ওপর রুটি রাখল।
২৪. তারপর সে তাঁবুটির দক্ষিণ দিকে টেবিলের বিপরীত দিকে দীপদানটি রাখল।
২৫. প্রভু যেমনটি আদেশ করেছিলেন সেই মতো মোশি দীপগুলি স্থাপন করল এবং সেগুলো প্রভুর সামনে রাখল।
২৬. এরপর মোশি সমাগম তাঁবুর পর্দার সামনে সোনার বেদীটি রাখল।
২৭. প্রভুর আদেশ মতো মোশি তার ভেতরে সুগন্ধি ধূপ-ধূনো পোড়ালো।
২৮. তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর প্রবেশ দরজায় পর্দা টাঙালো।
২৯. মোশি হোমবলির বেদীটি সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজার সামনে রাখল। তারপর মোশি সেই বেদীতে একটি হোমবলি দিল। সে প্রভুকে শস্য নৈবেদ্যও দিল। সে সবকিছুই প্রভুর আদেশ মতো করল।
৩০. মোশি এরপর সমাগম তাঁবু ও বেদীর মাঝখানে হাত মুখ ধোওযার জন্য জল ভর্তি পাত্রটি রাখল।
৩১. হাত ও পা ধোয়ার জন্য মোশি, হারোণ ও তার পুত্ররা এই পাত্রের জল ব্যবহার করল।
৩২. তারা প্রত্যেকবার তাঁবুতে ঢোকার সময় এবং বেদীর কাছে যাওয়ার সময় তাদের হাত পা ধুয়ে নিল। এসব কিছুই করা হল প্রভুর আদেশ অনুসারে।
৩৩. তারপর মোশি পবিত্র তাঁবুর প্রাঙ্গণের চারিদিকে পর্দা দিয়ে দিল। সে বেদীটি প্রাঙ্গণে রেখে প্রাঙ্গণের প্রবেশ দরজায় পর্দা লাগাল। এইভাবেই মোশি তার সব কাজ শেষ করল।
প্রভুর মহিমা
৩৪. এরপরই মেঘ এসে পবিত্র সমাগম তাঁবু ঢেকে ফেলল। এবং প্রভুর মহিমায় পবিত্র তাঁবু পরিপূর্ণ হল।
৩৫. মোশি সমাগম তাঁবুতে ঢুকতে পারল না। কারণ তা মেঘে ঢেকে ছিল এবং প্রভুর মহিমায় ছিল পরিপূর্ণ।
৩৬. এই মেঘই ইস্রায়েলের লোকদের দেখিয়ে দিয়েছিল যে কখন যাত্রা শুরু করতে হবে। যখন পবিত্র তাঁবুর ওপর থেকে মেঘ সরে যাবে তখনই ইস্রায়েলের লোকরা যাত্রা শুরু করতে পারবে।
৩৭. কিন্তু যখন মেঘ পবিত্র তাঁবুর ওপর ছিল তখন লোকরা তাদের যাত্রা শুরু করার চেষ্টা করেনি। যতক্ষণ না মেঘ ওপরে উঠেছিল ততক্ষণ তারা সেখানেই ছিল।
৩৮. তাই প্রভুর মেঘ দিনের বেলায় ছিল সমাগম তাঁবুর ওপরে এবং রাতে আগুন ছিল মেঘের ভেতরে। তাই ইস্রায়েলের সমগ্র পরিবার তাদের পুরো যাত্রাপথে মেঘটি দেখতে পাচ্ছিল।