পরামনোবিজ্ঞানীদের কাছে ইউরি গেলার বিশ্বের শ্রেষ্ঠতর মানসিক শক্তির অধিকারী। গেলারের সাইকো-কিনেসিস (Psycho-Kinesis) বা মানসিক শক্তির তথাকথিত পরীক্ষা আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও ইউরোপে যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছে। একাধিকবার সাইকো-কিনেসিস শক্তির দ্বারা একটা টেবিলের ওপর সোজা দাঁড় করানো ছুরি বা চামচকে টেবিলের অপরপ্রান্তে বসে না ছুঁয়েই বাঁকিয়ে দিয়েছেন গেলার। আবার, কখনও বা দু-আঙ্গুলের চাপে চামচ বা ছুরিকে ভেঙ্গে ফেলেছেন অতি অবহেলে।
এই ধরনের ঘটনা ঘটার পেছনে পরামনোবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা হল- মানুষের শক্তিকে এমন একটা পর্যায়ে উন্নত করা সম্ভব, যখন শরীরের বাইরের কোনও বস্তুর প্রভাবিত করা সম্ভব। গেলার মানসিক শক্তিকে বস্তুর উপর প্রয়োগসক্ষম একজন ব্যক্তি।
ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠিত চিত্র-শিল্পী শক্তি বর্মন বছর উনিশ-কুড়ি আগে কলকাতায় এসেছিলেন। তখন তাঁর সঙ্গে ইউরি গেলারের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতা নিয়ে একাধিকবার দীর্ঘ আলোচনা হয় আমার। পরে ফ্রান্স থেকে ইউরি গেলারের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার ওপর আমি একটি ভিডিও ক্যাসেট সংগ্রহ করি। তাতে লক্ষ্য করেছিলাম, টেবিলের একপ্রান্তে টেবিল না ছুঁয়ে বসেন ইউরি গেলার। টেবিলের ওপর অপর প্রান্তে একটা ছোট বেদী বা স্ট্যান্ড রাখা হয়। মিউজিয়ামে ছোটখাট মূর্তিগুলো যে ধরনের বেদীর ওপর রাখা হয় এও সেই ধরনেরই বেদী। বেদীর মাঝখানে লম্বা একটা ছিদ্র বা খাঁজ থাকে, যে ছিদ্র বা খাঁজে একটা চামচের তলার দিকটা ঢুকিয়ে সেটা খাড়া রাখা যায়। তার ওপরে তীব্র আলো ফেলা হয়। এই আলোগুলো এমনভাবে সাজানো হয়, যাতে গেলারের চোখে প্রতিফলিত হয়ে মনঃসংযোগে বাধার সৃষ্টি না করে। চামচের ওপরে খুব কাছ থেকে এবং চারপাশ থেকে তীব্র আলো রিফ্লেটারে প্রতিফলিত করে ফেলা হয়।
গভীরভাবে মনঃসংযোগ করে মানসিক শক্তিকে অপর প্রান্তের চামচে প্রয়োগ করতে থাকেন গেলার। দীর্ঘ সময় কেটে যায়, ঘণ্টার কাঁটা ঘোরে। একসময় দেখা যায় চামচটা বেঁকছে। একটু একটু করে চামচের হাতলটা বেঁকে যাচ্ছে।