‘অধ্যাত্মবাদ’ কাঠামো।

তার উপর নিয়ম-কানুন, আচার-আচরণের

পলেস্তারা চাপালেই ‘ধর্ম’।

 

এ’ভাবেই গড়ে উঠেছে ‘ধর্ম’

‘হিন্দু’, ‘মুসলিম’, খ্রিস্ট’ থেকে

কুঁচোটি পর্যন্ত

 

‘অধ্যাত্মবাদ’ অর্থ- আত্মা সংক্রান্ত মতবাদ

যার হাত ধরা-ধরি করে

‘পরমাত্মা’ – ‘ঈশ্বর’ – ‘আল্লা’

যে নামেই ডাকুন…

পরলোক, পরলোকের বিচার,

কর্মফল, জন্মান্তর, ভাগ্য…

আত্মার সুতোয় টনা দিলেই

জাপানি ঘুড়ির মত একে একে সারি সারি

লেজ নাড়তে নাড়তে চোখের সামনে দোল খায়।

 

অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে যা উঠে এসেছিল,

আজ তাই লোভী ও প্রাজ্ঞ মানুষের

কারিগরি জ্ঞানের ছোঁয়ায়

হাঙ্গরের দাঁত।

 

সে আজ হাজার দু’য়েক বছর আগের কথা

অধ্যাত্মবাদের বিরুদ্ধে চার্বাকবাদ

পাথরের ভল্লের বিরুদ্ধে পাথরের ভল্ল

ঠোকা-ঠুকি, চকমকি

লড়াই জমেছিল

বিশ্বাসের বিরুদ্ধে যুক্তির।

 

দু’হাজার বছর পেরিয়ে অধ্যাত্মবাদের স্পনসরের ছড়াছড়ি

বহুজাতিক স্তরে,

অফুরন্ত নিত্য-নতুন অস্ত্রের আমদানি

ঢাকা আজ রাষ্ট্রীয় কিংখাবে।

 

সারি সারি রকেটের বিরুদ্ধে

ভল্লকে ভরসা করা বোকার শামিল

ফুটে থাক যত তাতে অতীত গৌরবের ফুল।

অসম লড়াই –

শুরুর বাঁশি বাজার আগেই

বলে দেওয়া যায়

জিতবে কোন দল।

 

সাম্যের জন্য, শান্তির জন্য শেষ যুদ্ধ জিততে

আত্মা আর পরমাত্মার যত অস্ত্র,

অবয়বহীন যত ভয়,

ঐতিহ্যবাহিত যত নির্বোধ ধারণার

অভিজাত ধোঁয়াশা,

সুবিধাভোগী বুদ্ধিজীবীর

মস্তিষ্কের উপরকার তুতেনখামেনী

ধুলো,

সব কিছু ;

এই সব কিছু

রেণু রেণু ধুলোয় মেশাতে

ভল্ল ছেড়ে

আমাদের পা রাখতে হবেই লেসার রশ্মির যুগে।

আর তাই…

 

প্রবীর ঘোষ

৭২/৮ দেবীনিবাস রোড

কলকাতা ৭০০ ০৭৪

১২ ডিসেম্বর, ১৯৯৪

error: Content is protected !!