০০৯. সূরাঃ আত তাওবাহ
আয়াত | অবতীর্ণঃ মদিনা আয়াত সংখ্যাঃ ৭৫ রুকূঃ ১০ |
---|---|
১০১ | وَمِمَّنْ حَوْلَكُم مِّنَ الْأَعْرَابِ مُنَافِقُونَ ۖ وَمِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ ۖ مَرَدُوا عَلَى النِّفَاقِ لَا تَعْلَمُهُمْ ۖ نَحْنُ نَعْلَمُهُمْ ۚ سَنُعَذِّبُهُم مَّرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَىٰ عَذَابٍ عَظِيمٍ আর তোমাদের চতুর্দিকস্থ লোকদের মধ্য হতে কতিপয় বেদুঈন এবং মদীনাবাসীদের মধ্য হতেও কতিপয় লোক এমন মুনাফিক রয়েছে যারা নিফাকের চরমে পৌঁছে গেছে, তুমি তাদেরকে জান না, আমিই তাদেরকে জানি, আমি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করবো, তৎপর তারা মহা শাস্তির দিকে প্রত্যাবর্তিত হবে। |
১০২ | وَآخَرُونَ اعْتَرَفُوا بِذُنُوبِهِمْ خَلَطُوا عَمَلًا صَالِحًا وَآخَرَ سَيِّئًا عَسَى اللَّهُ أَن يَتُوبَ عَلَيْهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ এবং আরো কতকগুলো লোক আছে যারা নিজেদের অপরাধসমূহ স্বীকার করেছে, যারা মিশ্রিত আমল করেছিল, কিছু ভালো আর কিছু মন্দ, আশা রয়েছে যে, আল্লাহ তাদের প্রতি করুণা-দৃষ্টি করবেন, নিঃসন্দেহে আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাশীল পরম করুণাময়। |
১০৩ | خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ ۖ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ (হে নবী সঃ)! তুমি তাদের ধন-সম্পদ হতে যাকাত গ্রহণ কর, যা দ্বারা তুমি তাদেরকে পাক-সাফ করে দেবে, আর তাদের জন্যে দু’আ কর, নিঃসন্দেহে তোমরা দুআ’ হচ্ছে তাদের জন্যে শান্তির কারণ, আর আল্লাহ খুব শুনেন, খুব জানেন। |
১০৪ | أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ الصَّدَقَاتِ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ তারা কি এটা অবগত নয় যে, আল্লাহই নিজ বান্দাদের তাওবা কবূল করেন, আর তিনিই দান-খয়রাত কবূল করে থাকেন আর এটাও যে, আল্লাহ হচ্ছেন তাওবা কবূল করতে এবং অনুগ্রহ করতে পূর্ণ সমর্থবান? |
১০৫ | وَقُلِ اعْمَلُوا فَسَيَرَى اللَّهُ عَمَلَكُمْ وَرَسُولُهُ وَالْمُؤْمِنُونَ ۖ وَسَتُرَدُّونَ إِلَىٰ عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ হে নবী সঃ! তুমি বলে দাওঃ তোমরা কাজ করতে থাকো, অনন্তর তোমাদের কার্যকে অচিরেই দেখে নিবেন আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও ঈমানদারগণ, আর নিশ্চয়ই তোমাদেরকে প্রত্যাবর্তিত হতে হবে এমন এক সত্তার নিকট যিনি হচ্ছেন সকল অদৃশ্য ও প্রকাশ্য বিষয়ের জ্ঞাতা, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তোমাদের সকল কৃতকর্ম জানিয়ে দিবেন। |
১০৬ | وَآخَرُونَ مُرْجَوْنَ لِأَمْرِ اللَّهِ إِمَّا يُعَذِّبُهُمْ وَإِمَّا يَتُوبُ عَلَيْهِمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ এবং আরও কতক লোক আছে যাদের (সিদ্ধান্তের) ব্যাপার মূলতবী রয়েছে আল্লাহর আদেশ আসা পর্যন্ত, হয় তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন, অথবা তাদের তাওবা কবূল করবেন, অথবা তাদের তাওবা কবূল করবেন, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী প্রজ্ঞাময়। |
১০৭ | وَالَّذِينَ اتَّخَذُوا مَسْجِدًا ضِرَارًا وَكُفْرًا وَتَفْرِيقًا بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ وَإِرْصَادًا لِّمَنْ حَارَبَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ مِن قَبْلُ ۚ وَلَيَحْلِفُنَّ إِنْ أَرَدْنَا إِلَّا الْحُسْنَىٰ ۖ وَاللَّهُ يَشْهَدُ إِنَّهُمْ لَكَاذِبُونَ আর কেউ কেউ এমন আছে যারা এ উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করেছে যেন তারা (ইসলামের) ক্ষতি সাধন করে এবং কুফুরীর কথাবার্তা বল আর মু’মিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে, আর ঐ ব্যক্তির অবস্থানের ব্যবস্থা করে যে এর পূর্ব হতেই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধী, আর তারা শপথ করে বলবেঃ মঙ্গল ভিন্ন আমাদের আর কোন উদ্দেশ্য নেই; আর আল্লাহ সাক্ষী আছেন যে, তারা সম্পূর্ণ মিথ্যাবাদী। |
১০৮ | لَا تَقُمْ فِيهِ أَبَدًا ۚ لَّمَسْجِدٌ أُسِّسَ عَلَى التَّقْوَىٰ مِنْ أَوَّلِ يَوْمٍ أَحَقُّ أَن تَقُومَ فِيهِ ۚ فِيهِ رِجَالٌ يُحِبُّونَ أَن يَتَطَهَّرُوا ۚ وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُطَّهِّرِينَ (হে মুহাম্মদ সঃ)! তুমি কখনো ওতে (নামাযের জন্যে) দাঁড়াবে না; অবশ্য যে মসজিদের ভিত্তি প্রথম দিন হতেই তাকওয়ার উপর স্থাপিত হয়েছে তা এর উপযোগী যে, তুমি তাতে (নামাযের জন্যে) দাঁড়াবে; ওতে এমন সব লোক রয়েছে যারা উত্তমরূপে পাক হওয়াকে পছন্দ করে, আর আল্লাহ উত্তমরূপে পবিত্রতা সম্পাদনকারীদেরকে পছন্দ করেন। |
১০৯ | أَفَمَنْ أَسَّسَ بُنْيَانَهُ عَلَىٰ تَقْوَىٰ مِنَ اللَّهِ وَرِضْوَانٍ خَيْرٌ أَم مَّنْ أَسَّسَ بُنْيَانَهُ عَلَىٰ شَفَا جُرُفٍ هَارٍ فَانْهَارَ بِهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ ۗ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ তবে কি এমন ব্যক্তি উত্তম, যে স্বীয় ইমারতের ভিত্তি আল্লাহর ভীতির উপর এবং তাঁর সন্তুষ্টির উপর স্থাপন করেছে অথবা সেই ব্যক্তি, যে স্বীয় ইমারতের ভিত্তি স্থাপন করেছে কোন গহ্বরের কিনারায়, যা ধ্বসে পড়ার উপক্রম, অতঃপর তা তাকে নিয়ে জাহান্নামের আগুনে পতিত হয়। আর আল্লাহ এমন যালিমদেরকে সৎপথ প্রদর্শন করেন না। |
১১০ | لَا يَزَالُ بُنْيَانُهُمُ الَّذِي بَنَوْا رِيبَةً فِي قُلُوبِهِمْ إِلَّا أَن تَقَطَّعَ قُلُوبُهُمْ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ তাদের এই ইমারত যা তারা নির্মাণ করেছে, তা সদা তাদের মনে খটকা সৃষ্টি করতে থাকবে, হ্যাঁ, যদি তাদের (সেই) অন্তরই ধ্বংস হয়ে যায়, তবে তো কথাই নাই, আর আল্লাহ হচ্ছেন মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। |
১১১ | إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنجِيلِ وَالْقُرْآنِ ۚ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُم بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ নিঃসন্দেহে আল্লাহ মু’মিনদের নিকট থেকে তাদের প্রাণ ও তাদের ধন-সম্পদ সমূহকে এর বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন যে, তাদের জন্যে জান্নাত রয়েছে, তারা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করে, অতএব তারা হয় হত্যা করে অথবা তাদেরকে হত্যা করা হয়, এর (এই যুদ্ধের) দরুন (জান্নাত প্রদানের) সত্য অঙ্গীকার করা হয়েছে তাওরাতে, ইনজীলে এবং কুরআনে; আর কে আছে নিজের অঙ্গীকার পালনকারী আল্লাহ অপেক্ষা অধিক? অতএব তোমরা আনন্দ করতে থাকো তোমাদের এই ক্রয়-বিক্রয়ের উপর, যা তোমরা সম্পাদন করেছো, আর এটা হচ্ছে বিরাট সফলতা। |
১১২ | التَّائِبُونَ الْعَابِدُونَ الْحَامِدُونَ السَّائِحُونَ الرَّاكِعُونَ السَّاجِدُونَ الْآمِرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّاهُونَ عَنِ الْمُنكَرِ وَالْحَافِظُونَ لِحُدُودِ اللَّهِ ۗ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ তারা হচ্ছে তাওবাকারী, ইবাদতকারী প্রশংসাকারী সিয়াম পালনকারী, রুকু ও সিজদাকারী, সৎ বিষয় শিক্ষা প্রদানকারী এবং মন্দ বিষয়ে বাধা প্রদানকারী, আল্লাহর সীমাসমূহের সংরক্ষণকারী; আর তুমি মু’মিনদেরকে সুসংবাদ শুনিয়ে দাও। |
১১৩ | مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَن يَسْتَغْفِرُوا لِلْمُشْرِكِينَ وَلَوْ كَانُوا أُولِي قُرْبَىٰ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّهُمْ أَصْحَابُ الْجَحِيمِ নবী ও অন্যান্য মু’মিনদের জন্যে জায়েয নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করে, যদিও তারা আত্মীয়ই হোক না কেন, একথা প্রকাশ হওয়ার পর যে তারা জাহান্নামের অধিবাসী। |
১১৪ | وَمَا كَانَ اسْتِغْفَارُ إِبْرَاهِيمَ لِأَبِيهِ إِلَّا عَن مَّوْعِدَةٍ وَعَدَهَا إِيَّاهُ فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُ أَنَّهُ عَدُوٌّ لِّلَّهِ تَبَرَّأَ مِنْهُ ۚ إِنَّ إِبْرَاهِيمَ لَأَوَّاهٌ حَلِيمٌ আর ইব্রাহীমের নিজ পিতার জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করা, তা তো শুধু সেও ওয়াদার কারণে ছিল, যে ওয়াদা তিনি তার সাথে করেছিলেন। অতঃপর যখন তাঁর নিকট প্রকাশ পেলো যে, সে (পিতা) আল্লাহর দুশমন, তখন তিনি সম্পর্ক ছিন্ন করেন। বাস্তবিকই ইব্রাহীম ছিলেন অতিশয় ইবাদত গুজার, সহনশীল। |
১১৫ | وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِلَّ قَوْمًا بَعْدَ إِذْ هَدَاهُمْ حَتَّىٰ يُبَيِّنَ لَهُم مَّا يَتَّقُونَ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ আর আল্লাহ এরূপ নন যে, কোন জাতিকে হিদায়াত করার পর পথভ্রষ্ট করে দেন, যে পর্যন্ত না তাদেরকে সেসব বিষয় পরিষ্কারভাবে বলে দেন, যা হতে তারা বেঁচে থাকবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ হচ্ছেন সর্বজ্ঞ। |
১১৬ | إِنَّ اللَّهَ لَهُ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ يُحْيِي وَيُمِيتُ ۚ وَمَا لَكُم مِّن دُونِ اللَّهِ مِن وَلِيٍّ وَلَا نَصِيرٍ নিশ্চয়ই আল্লাহরই রাজত্ব রয়েছে আসমানসমূহকে ও যমীনে; তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটিয়ে থাকেন; আর তোমাদের জন্যে আল্লাহ ছাড়া না কোন বন্ধু আছে আর না কোন সাহায্যকারী। |
১১৭ | لَّقَد تَّابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ مِن بَعْدِ مَا كَادَ يَزِيغُ قُلُوبُ فَرِيقٍ مِّنْهُمْ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ ۚ إِنَّهُ بِهِمْ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ আল্লাহ অনুগ্রহ করলেন নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি যারা নবীর আনুগত্য করেছিলেন সংকট মুহূর্তে (তাবুকের যুদ্ধে), এমন কি যখন তাদের মধ্যকার এক দলের অন্তর বিচলিত হওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তৎপর আল্লাহ তাদের প্রতি অনুগ্রহপরায়ণ হলেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের সকলের উপর স্নেহশীল, করুণাময়। |
১১৮ | وَعَلَى الثَّلَاثَةِ الَّذِينَ خُلِّفُوا حَتَّىٰ إِذَا ضَاقَتْ عَلَيْهِمُ الْأَرْضُ بِمَا رَحُبَتْ وَضَاقَتْ عَلَيْهِمْ أَنفُسُهُمْ وَظَنُّوا أَن لَّا مَلْجَأَ مِنَ اللَّهِ إِلَّا إِلَيْهِ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ لِيَتُوبُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ আর ঐ তিন ব্যক্তির প্রতিও (অনুগ্রহ করলেন) যাদেরকে পিছে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল (মুসলমানদের সাথে বের হওয়া থেকে) এই পর্যন্ত যে, যখন ভূ-পৃষ্ঠ নিজ প্রশস্ততা সত্ত্বেও তাদের প্রতি সংকীর্ণ হতে লাগলো এবং তারা নিজেরা নিজেদের জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে পড়লো আর তারা বুঝতে পারলো যে, আল্লাহর পাকড়াও হতে কোথাও আশ্রয় পাওয়া যেতে পারে না তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করা ব্যতীত; তৎপর তাদের প্রতি অনুগ্রহ-দৃষ্টি করলেন, যাতে তারা তাওবা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ অতিশয় অনুগ্রহকারী, করুণাময়। |
১১৯ | يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ হে মু’মিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং (কথায়-কাজে) সত্যবাদীদের সঙ্গে থাকো। |
১২০ | مَا كَانَ لِأَهْلِ الْمَدِينَةِ وَمَنْ حَوْلَهُم مِّنَ الْأَعْرَابِ أَن يَتَخَلَّفُوا عَن رَّسُولِ اللَّهِ وَلَا يَرْغَبُوا بِأَنفُسِهِمْ عَن نَّفْسِهِ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ لَا يُصِيبُهُمْ ظَمَأٌ وَلَا نَصَبٌ وَلَا مَخْمَصَةٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا يَطَئُونَ مَوْطِئًا يَغِيظُ الْكُفَّارَ وَلَا يَنَالُونَ مِنْ عَدُوٍّ نَّيْلًا إِلَّا كُتِبَ لَهُم بِهِ عَمَلٌ صَالِحٌ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجْرَ الْمُحْسِنِينَ মদীনার অধিবাসীদের এবং তাদের আশে-পাশে যেসব বেদুঈন রয়েছে, তাদের পক্ষে এটা উচিত ছিল না যে, তারা আল্লাহর রাসূলের সঙ্গী না হয়, আর এটাও (উচিত ছিল) না যে, নিজেদের প্রাণ তাঁর প্রাণ অপেক্ষা প্রিয় মনে করে, এর কারণ এই যে, আল্লাহর পথে তাদের যে পিপাসা দেখা দেয়, যে ক্লান্তি স্পর্শ করে, আর যে ক্ষুধা পায় আর তাদের এমন পদক্ষেপ কাফিরদের ক্রোধের কারণ হয়ে থাকে, আর দুশমনদের হতে তারা যা কিছু প্রাপ্ত হয়, এর প্রত্যেকটির বিনিময়ে তাদের জন্যে এক একটি নেক আমল লিপিবদ্ধ হয়ে যায়, নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎ কর্মশীলদের পুণ্যফল বিনষ্ট করবেন না। |
১২১ | وَلَا يُنفِقُونَ نَفَقَةً صَغِيرَةً وَلَا كَبِيرَةً وَلَا يَقْطَعُونَ وَادِيًا إِلَّا كُتِبَ لَهُمْ لِيَجْزِيَهُمُ اللَّهُ أَحْسَنَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ আর ছোট-বড় যা কিছু তারা ব্যয় করেছে, আর যত প্রান্তর তাদের অতিক্রম করতে হয়েছে, তৎসমুদয়ও তাদের জন্যে লিখিত হয়েছে, যেন আল্লাহ তাদের কৃতকর্মসমূহের অতি উত্তম বিনিময় প্রদান করেন। |
১২২ | وَمَا كَانَ الْمُؤْمِنُونَ لِيَنفِرُوا كَافَّةً ۚ فَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ আর মু’মিনদের এটা (ও) সমীচীন নয় যে, (জিহাদের জন্যে) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়ে; সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেকটি বড় দল হতে এক একটি ছোট দল বহির্গত হয়, যাতে তারা ধর্মজ্ঞান অর্জন করতে পারে, আর যাতে তারা নিজ কওমকে (নাফরমানী হতে) ভয় প্রদর্শন করে যখন তারা ওদের নিকট প্রত্যাবর্তন করে, যেন তারা সতর্ক হয়। |
১২৩ | يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُوا الَّذِينَ يَلُونَكُم مِّنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوا فِيكُمْ غِلْظَةً ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَعَ الْمُتَّقِينَ হে মু’মিনগণ! ঐ কাফিরদের সাথে যুদ্ধ কর যারা তোমাদের আশে-পাশে অবস্থান করে, আর যেন তারা তোমাদের মধ্যে কঠোরতা পায়; আর জেনে রেখো যে, আল্লাহ পরহেযগারদের সাথে রয়েছেন। |
১২৪ | وَإِذَا مَا أُنزِلَتْ سُورَةٌ فَمِنْهُم مَّن يَقُولُ أَيُّكُمْ زَادَتْهُ هَـٰذِهِ إِيمَانًا ۚ فَأَمَّا الَّذِينَ آمَنُوا فَزَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَهُمْ يَسْتَبْشِرُونَ আর যখন কোন সূরা অবতীর্ণ করা হয় তখন তাদের মধ্যে কিছু লোক বলেঃ তোমাদের মধ্যে এই সূরা কার ঈমান বৃদ্ধি করলো? অনন্তর যেসব লোক ঈমান এনেছে, এই সূরা তাদের ঈমানকে বর্ধিত করেছে এবং তারাই আনন্দ লাভ করেছে। |
১২৫ | وَأَمَّا الَّذِينَ فِي قُلُوبِهِم مَّرَضٌ فَزَادَتْهُمْ رِجْسًا إِلَىٰ رِجْسِهِمْ وَمَاتُوا وَهُمْ كَافِرُونَ আর যাদের অন্তরসমূহে রোগ রয়েছে, এই সূরা তাদের কলুষের সাথে আরো কলুষতা বর্ধিত করেছে, আর তাদের কুফরী অবস্থাতেই মৃত্যু হয়েছে। |
১২৬ | أَوَلَا يَرَوْنَ أَنَّهُمْ يُفْتَنُونَ فِي كُلِّ عَامٍ مَّرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ لَا يَتُوبُونَ وَلَا هُمْ يَذَّكَّرُونَ আর তারা কি দেখে না যে, তারা প্রতি বছর একবার বা দু’বার কোন না কোন বিপদে পতিত হয়ে থাকে? তবুও প্রত্যাবর্তন করে না, আর না তারা উপদেশ গ্রহণ করে। |
১২৭ | وَإِذَا مَا أُنزِلَتْ سُورَةٌ نَّظَرَ بَعْضُهُمْ إِلَىٰ بَعْضٍ هَلْ يَرَاكُم مِّنْ أَحَدٍ ثُمَّ انصَرَفُوا ۚ صَرَفَ اللَّهُ قُلُوبَهُم بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لَّا يَفْقَهُونَ আর যখন কোন সূরা নাযিল করা হয় তখন তারা একে অপরের দিকে তাকাতে থাকে (এবং ইঙ্গিতে বলে); তোমাদেরকে কেউ দেখছে না তো? অতঃপর তারা চলে যায়; আল্লাহ তাদের অন্তরগুলোকে ফিরিয়ে দিয়েছেন, কারণ তারা হচ্ছে নির্বোধ সমাজ মাত্র। |
১২৮ | لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ তোমাদের নিকট আগমন করেছে তোমাদেরই মধ্যকার এমন একজন রাসূল যার কাছে তোমাদের ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া অতি কষ্টদায়ক মনে হয়, যিনি হচ্ছেন তোমাদের খুবই হিতাকাঙ্ক্ষী, মু’মিনদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, করুণাপরায়ণ। |
১২৯ | فَإِن تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ ۖ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ অতঃপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তুমি বলে দাওঃ আমার জন্যে তো আল্লাহই যথেষ্ট, তিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য মা’বূদ নেই আমি তাঁরই উপর নির্ভর করছি, আর তিনি হচ্ছেন মহা আরশের মালিক। |