মাসকয়েক আগের ঘটনা, নিউ জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল কলোনীর যুবতী রূপাকে ভূতে ধরেছে, অতিপ্রাকৃতিক যত ঘটনা ঘটে চলেছে রূপাদের বাড়িতে। মুহূর্তে খবর এতই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল যে ঘটনাটার রহস্য অনুসন্ধানে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়িকে নামতে হয়। শোনা যায় বাল্ব, কৌটো, শিশি এবং অন্যান্য জিনিসপত্তর আপনা থেকেই ছিটকে ছিটকে যেখানে সেখানে এসে পড়ছিল।
আমাদের সমিতির সহযোগী সংস্থা শিলিগুড়ির নবোদয় বিজ্ঞান পরিষদের পক্ষে প্রলয় চৌধুরী, পঙ্কজ বসু, বিশ্বদীপ রায় মুহুরী সত্যানুসন্ধানে নেমে পড়েন। ঘটনার বিবরণ জানতে রূপার বাবা এ কে ব্যানার্জি, মা রেখা, রূপা, রূপার বন্ধ্য কমলেশ রায়, পাশের কোয়ার্টারের পরিমল চন্দ্র পাল এবং আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বলেন ও. সি. রাজকুমার ঘোষের সঙ্গেও।
ঘটনার সকলের বিবরণগুলো পরপর সাজানোতে যে চিত্রটা ভেসে উঠল সেটা হল এই- রূপাদের বারিতে কমলেশ ও তোর বন্ধু-বান্ধবীদের হৈ-হুল্লোড়ে বিরক্ত পরিমলবাবু প্রতিবাদ জানিয়ে ছিলেন। সে চুরাশি সালের ঘটনা। প্রতিবাদ জানাবার পর থেকে পরিমল বাবুর কোয়ার্টারের উঠোনে বোতল, টিন ইত্যাদি পড়তে থাকে। পরিমলবাবু কাউকে হাতে হাতে ধরতে না পারলেও এগুলোকে মানুষেরই কীর্তি অনুমান করে ৬ এপ্রিল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ করেন। আশে-পাশের কিছু মানুষজন রূপা-কমলেশদের সন্দেহ করতে থাকেন। ব্যানার্জি পরিবার অবশ্য দৃঢ়তার সঙ্গে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ব্যাপারটা হয় তো কোনও মানুষেরই কাজ নয়।
ভূতের উপদ্রব বন্ধ হয়। ৮৮-র সেপ্টেম্বরের শুরুতেই পরিমলবাবুর সঙ্গে ব্যানার্জি পরিবারের সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং ভূতের উপদ্রবও শুরু হয়। ৪ সেপ্টেম্বর পরিমলবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। ভূত তার পরে পরেই উপদ্রব বন্ধ রাখে। আবার শুরু ৮৯-র সেপ্টেম্বরে। ২৫ সেপ্টেম্বর পরিমলবাবু আবার ফাঁড়িতে দৌড়লেন। আশে-পাশের জনমতও পরিমলবাবুর বাড়িতে ঘটে যাওয়া ঘটনার পিছনে ভূতের বদলে মানুষেরই হাত আছে বলে সন্দিগ্ধ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে থাকেন। অবস্থা ঘোরাল হচ্ছে দেখে পুলিশ অনুসন্ধানে নামে। আর এই সময়ই শুরু হয় ব্যানার্জি বাবুদের বাড়িতেও ভূতের নানা উপদ্রব। সঙ্গে বাড়তি বোঝা-রূপার উপর ভূতের ভর। ভূত তাড়াতে ওঝা আসে, ঝারফুঁকও চলে। ভূত বিদায় নেয়।
স্থানীয় মানুষ ও নবোদয় বিজ্ঞান পরিষদ কিন্তু অনুমান করে জনরোষ ও পুলিশের হাত থেকে বাঁচতেই ব্যানার্জিবাবুর বাড়িতে এবং রূপার উপর ভূতের অত্যাচার অনিবার্য হয়ে উঠেছিল।
“অলৌকিক নয়,লৌকিক- ২য় খন্ড ” বই সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যঃ
♦ কিছু কথাঃ যুক্তিবাদ প্রসঙ্গে
একঃ ভূতের ভর
♦ ভূতের ভরঃ বিভিন্ন ধরন ও ব্যাখ্যা
♦ গুরুর আত্মার খপ্পরে জনৈকা শিক্ষিকা
♦ প্রেমিকের আত্মা ও এক অধ্যাপিকা
ভূতে পাওয়া যখন ম্যানিয়াস ডিপ্রেসিভ
♦ সবার সামনে ভূত শাড়ি করে ফালা
♦ গ্রামে ফিরলেই ফিরে আসে ভূতটা
♦ একটি আত্মার অভিশাপ ও ক্যারেটে মাস্টার
দুইঃ পত্র পত্রিকার খবরে ভূত
♦ ট্যাক্সিতে ভূতের একটি সত্যি কাহিনী ও এক সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক
♦ এক সত্যি ভূতের কাহিনী ও এক বিজ্ঞানী
♦ বেলঘরিয়ার গ্রীন পার্কে ভূতুরে বাড়িতে ঘড়ি ভেসে বেড়ায় শূন্যে
♦ দমদমের কাচ-ভাঙ্গা হল্লাবাজ-ভূত
তিনঃ যে ভূতুরে চ্যালেঞ্জের মুখে বিপদে পড়েছিলাম
চারঃ ভূতুরে চিকিৎসা
♦ ফিলিপিনো ফেইথ হিলার ও ভূতুরে অস্ত্রোপচার
♦ ফেইথ হিলার ও জাদুকর পি.সি. সরকার (জুনিয়র)
♦ পরকাল থেকে আসা বিদেহী ডাক্তার
♦ বিদেহী ডাক্তার দ্বারা আরোগ্য লাভ
♦ ডাইনী সম্রাজ্ঞী ঈপ্সিতার ভূতুরে চিকিৎসা
পাঁচঃ ভূতুরে তান্ত্রিক
♦ গৌতম ভারতী ও তাঁর ভূতুরে ফটোসম্মোহন
♦ ভূতুরে সম্মোহনে মনের মত বিয়েঃ কাজী সিদ্দীকির চ্যালেঞ্জ
ছয়ঃ ডাইনি ও আদিবাসী সমাজ
বাঁকুড়া জেলা হ্যান্ডবুক, ১৯৫১ থেকে
♦ ডাইনি, জানগুরু প্রথার বিরুদ্ধে কি করা উচিৎ
♦ ডাইনি হত্যা বন্ধে যে সব পরিকল্পনা এখুনি সরকারের গ্রহণ করা উচিৎ
♦ জানগুরুদের অলৌকিক ক্ষমতার রহস্য সন্ধানে
সাতঃ আদিবাসী সমাজের তুক-তাক, ঝাড়- ফুঁক
♦ ‘বিষ-পাথর’ ও ‘হাত চালান’এ বিষ নামান
আটঃ ঈশ্বরের ভর
♦ ঈশ্বরের ভর কখনো মানসিক রোগ, কখনো অভিনয়
♦ কল্যাণী ঘোষপাড়ায় সতীমা’ইয়ের মেলায় ভর
♦ হাড়োয়ার উমা সতীমার মন্দিরে গণ-ভর
♦ আর একটি হিস্টিরিয়া ভরের দৃষ্টান্ত
♦ একই অঙ্গে সোম-শুক্কুর ‘বাবা’ ও মা’য়ের ভর
♦ অবাক মেয়ে মৌসুমী’র মধ্যে সরস্বতীর অধিষ্ঠান (?) ও প্রডিজি প্রসঙ্গঃ
♦ প্রডিজি কি? ও কিছু বিস্ময়কর শিশু প্রতিভা
♦ বংশগতি বা জিন প্রসঙ্গে কিছু কথা
♦ বিস্ময়কর স্মৃতি নিয়ে দু-চার কথা
♦ দুর্বল স্মৃতি বলে কিছু নেই, ঘাটতি শুধু স্মরণে
♦ মানবগুণ বিকাশে বংশগতি ও পরিবেশের প্রভাব
♦ মানবগুণ বিকাশে পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব-জীবনে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব-জীবনে আর্থ-সামাজিক পরিবেশের প্রভাব
♦ মানব জীবনে সমাজ-সাংস্কৃতিক পরিবেশের প্রভাব
♦ অবাক মেয়ে মৌসুমীর রহস্য সন্ধানে
♦ বক্সিংয়ের কিংবদন্তী মহম্মদ আলি শূন্যে ভাসেন আল্লা-বিশ্বাসে!